তাঁর আসল নাম সাম্যময় বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ওই নামে তাঁকে পরিবারের সদস্যরা ছাড়া কেউই চিনতেন না বৈকি। বা এখনও চিনবেন না কেউ। কিন্তু যদি বলা হয়, তিনি আর কেউ নন “ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়” আরও পরিষ্কার করে বললে “ঢাকাইয়া ভানু” বা “পূবের ভানু” তবে আর কথা নেই ।
বাংলা চলচ্চিত্রের বরেণ্য এই অভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন ২৬ আগস্ট। ১৯২০ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন বিক্রমপুর বর্তমানের মুন্সিগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। তাঁর প্রাথমিক স্কুলজীবন বিক্রমপুরে কাটলেও হাইস্কুল এবং কলেজজীবন পুরোটাই কেটেছে ঢাকা শহরে। তিনি পড়েছেন পুরনো ঢাকার জগন্নাথ কলেজে। তাই তাঁর কথায় পুরনো ঢাকার টান ছিল বরাবরই।
১৯৪০ সালে বড় দিদির কলকাতার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পাকাপাকিভাবে সেখানেই থেকে গিয়েছিলেন সাম্যময় বন্দ্যোপাধ্যায়, তবে তখনই “ভানু” হননি তিনি। টালিগঞ্জের অভিনেতাদের খাতায় নাম লেখানোর পর তিনি পরিচিতি পান এ নামে। ১৯৪৭ সালে “জাগরণ” ছবির মধ্য দিয়ে তাঁর বাংলা চলচ্চিত্রের জীবন শুরু হয়, সেই সঙ্গে নামও পাল্টে গিয়ে হয়ে যান ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৯৪৭ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ৩৬ বছরের অভিনয়জীবনে মোট ২৩১টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম কয়েকটি সিনেমাগুলো হলো ‘গল্প হলেও সত্যি’, ‘জমালয়ে জীবন্ত মানুষ’, ‘মৃতের মর্তে আগমন’, ‘সাড়ে ৭৪’ । ‘বন্দিশ’ ও ‘এক গাঁও কি কাহানি’ নামে দুটি হিন্দি ভাষার সিনেমাও করেছিলেন ভানু ।
চিৎপুরের যাত্রার মঞ্চেও ছিল ভানুর সমান আধিপত্য। শুধু অভিনয় নয়, সংলাপ লেখা এবং গানও গেয়েছেন অনেক। ভানুর কৌতুকের অডিও অতীতের মতো আজও রেকর্ড সংখ্যক বিক্রি হয়। ১৯৮৩ সালের ৪ মার্চ ৬২ বছর বয়সে মারা যান ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ।