কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও জাতীয় প্রেসক্লাবে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে কিংবদন্তী সাংবাদিক, কলামিস্ট ও লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরীকে। অনেকটা নীরবে নিভৃতেই বিদায় নিলেন গাফফার চৌধুরী। শহীদ মিনারে আর দশজন সাংস্কৃতিক কর্মীর মৃত্যুতে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের যে আয়োজন থাকে সেই একই আয়োজন নির্ভর বিদায় গাফফার চৌধুরীর বেলাতেও বেশ বেমানান বলেই মনে করেন সচেতন মহল। কালজয়ী একুশের গানের রচয়িতা, ভাষা সৈনিক এবংবঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ মানুষ হিসেবে তিনি আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। কিন্তু তার বিদায়ে ছিল না কোনো রাষ্ট্রীয় আয়োজন।

মহান একুশের অমর গানের এই রচয়িতার মরদেহ শনিবার দুপুরে নিয়ে যাওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে। সেখানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে শ্রদ্ধা নিবেদনে ঢল নামে হাজারো মানুষের। বাংলার মহান এই সন্তান তার সৃষ্টিকর্ম ও দেশের জন্য তার অবদানের মাধ্যমে অমর হয়ে থাকবে বলে জানান সাধারণ মানুষেরা।

মাতৃভাষার জন্য যারা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছেন, সেই ভাইদের স্মরণে গান লিখে অমর যিনি, তিনি কিংবদন্তী সাংবাদিক, কলামিস্ট ও লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরী। মহান একুশের অমর গানের সেই স্রষ্টা এবার শেষবারের মত এলেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে।

শহীদ মিনারে গার্ড অব অনার প্রদান শেষে কিংবদন্তী এই সাংবাদিকের প্রতি শ্রদ্ধা রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে প্রতিনিধিরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা জানান জাতীয় সংসদের স্পিকারও।

শেষবারের মত জাতির এই কীর্তি সন্তানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শনিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে বিভিন্ন সামাজিক সাংষ্কৃতিক রাজনৈতিক সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের আগমন ছিল।
শহীদ মিনার থেকে আব্দুল গাফফার চৌধুরীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েল কেন্দ্রীয় মসজিদে। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় জানার নামাজ। এরপর তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় জাতীয় প্রেসক্লাবে। সেখানে জানাজার নামাজের পর শ্রদ্ধা জানায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন।
পরে আবদুল গাফফার চৌধুরীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। সেখানে স্ত্রীর কবরের পাশে সমাহিত করা হয় কিংবদন্তী এই ব্যক্তিত্বকে।
লন্ডনের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ১৯ মে ভোরে স্থানীয় একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আবদুল গাফফার চৌধুরী। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।