আজ মুক্তবুদ্ধিচর্চার প্রবক্তা ও মননশীল প্রবন্ধকার মোতাহের হোসেন চৌধুরীর প্রয়াণ দিবস। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর মারা যান তিনি। মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১৯০৩ সালে নোয়াখালী জেলার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। । তার পিতার নাম সৈয়দ আবদুল মজিদ ও মাতার নাম ফতেমা খাতুন। মোতাহের হোসেন চৌধুরী কিশোর বয়স থেকেই সাহিত্যে আগ্রহী হয়ে উঠেন।
তিনি প্রথমদিকে কবিতা বেশি লিখতেন। বাঙালী মুসলমান সমাজের অগ্রগতির আন্দোলন হিসেবে পরিচিত “বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের” সাথে যুক্ত ছিলেন। কুমিল্লা ইউসুফ হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে আইএ ও বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন করেন। ইউসুফ হাইস্কুলে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু হয়। প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে বাংলায় মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন ১৯৪৩ সালে।
এরপর কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে লেকচারার পদে যোগদান করেন ১৯৪৬ সালে। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর চট্টগ্রাম কলেজে যোগদান করেন ও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ পদেই অধিষ্ঠিত থাকেন। এ কলেজে তার সহকর্মী ছিল প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আবুল ফজল। এছাড়াও জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে তিনি কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদির প্রমুখ’র সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন।
মোতাহের হোসেনের প্রবন্ধের গদ্যশৈলীতে প্রমথ চৌধুরী এবং মননে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’র প্রভাব লক্ষ্যণীয়। তার রচনায় সংস্কৃতি, ধর্ম, মানবতাবোধ ও মানুষের জীবনাচরণের মৌলিক বিষয়গুলি সংজ্ঞায়িত ও উন্মোচিত হওয়ার প্রয়াস দেখিয়েছে। বিচিত্র ও সুন্দর জীবনের মধ্যেও তিনি মহত্তোম জীবন খুঁজে বেড়িয়েছেন। ‘সংস্কৃতি কথা’ (১৯৫৮) তার প্রধান প্রবন্ধ গ্রন্থ। বার্ট্রান্ড রাসেলের ‘কনকোয়েস্ট অফ হ্যাপিনেস’ গ্রন্থের অনুবাদ ‘সুখ’ (১৯৬৫) তার দ্বিতীয় গ্রন্থ এবং তৃতীয় গ্রন্থ ক্লাইভ বেল-এর ‘সিভিলাইজেশন’ গ্রন্থের ভাবানুবাদ ‘সভ্যতা’ (১৯৬৫)।