অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার বাংলাদেশের টিভি নাটক ও মঞ্চ নাটকের জীবন্ত কিংবদন্তী। যিনি এখনো মঞ্চে অভিনয়ে অনবদ্য, দর্শক যেন নতুন করে আবারো তা প্রাণভরে উপভোগ করলেন। গত ৫ নভেম্বর রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার হলে ‘থিয়েটার’র ৩৮’তম প্রযোজনা ‘মুক্তি’ নাটকের শততম মঞ্চায়ন হয়ে গেলো। লী ব্লেসিং-এর মূল গল্পে এই নাটকটির ভাবানুবাদ করেছেন মিজারুল কায়েস। নির্দেশনা দিয়েছেন ফেরদৌসী মজুমদার ও রামেন্দু মজুমদার কন্যা ত্রপা মজুমদার।
‘মুক্তি’ নাটকে মা চরিত্রে ফেরদৌসী মজমুদার, সোহিনী চরিত্রে তানভীন সুইটি, রজনী চরিত্রে তামান্না ইসলাম এবং দামিনী চরিত্রে অভিনয় করেছেন তানজুম আরা পল্লী। হল ভর্তি দর্শক পিনপতন নীরবতার মধ্য দিয়ে ‘মুক্তি’ নাটকের শততম মঞ্চায়ন উপভোগ করেন। নাটকের শেষ দৃশ্যে মা’কে ঘিরে তিন কন্যা সন্তানের মা-মা-মা বলে ডাক হল ভর্তি দর্শকের মধ্যে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি করে। শুধু তাই নয় নাটকের শেষ দৃশ্যটি অনেকের চোখ ভিজিয়েছে। আর এখানেই মুক্তি নাটকের পুরো টিমের কৃতিত্বতা।
নাটকটির প্রযোজনা উপদেষ্টা রামেন্দু মজুমদার বলেন,‘নাটকে তিন কন্যা মায়ের কাছ থেকে দূরে চলে গিয়ে নিজেদের মতো করে মুক্তির আস্বাদ পেতে চাইছে। নি:সঙ্গ মা ভাবেন, সারাজীবন তিনি কি এই পরিণতির জন্যে তিনটি সন্তানকে মানুষ করেছেন? এভাবে কি মেয়েরা সত্যিকারের মুক্তি খুঁজে পাবে? নাটকের মধ্যদিয়ে আমরা এ প্রশ্নটিই করতে চেয়েছি।’
নাটকের মঞ্চায়ন শেষে কিংবদন্তী অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার বলেন,‘আপনারা কষ্ট করে মুক্তির শততম মঞ্চায়নে এসেছেন, এ জন্য আপানাদের প্রতি আমি বিশেষত আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। আগামীতেও এমনি করেই আমাদের নাটকের পাশে থেকে অনুপ্রেরণা দিয়ে যাবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’

ফেরদৌসী মজুমদার
নির্দেশক ত্রপা মজুমদার বলেন,‘২০০৪ সালের ২৭ নভেম্বর মুক্তি নাটকের প্রথম মঞ্চায়ন হয়েছিলো। সেই থেকে আজ অবধি দর্শকের কাছ থেকে আমরা যেভাবে সাড়া পেয়ে আসছি তাতে সত্যিই মুগ্ধ আমরা। আমাদের পুরো টিমের কষ্ট সার্থক হলো মুক্তি’র শততম মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে। আমার বিশ্বাস আগামীতেও দর্শক আমাদের পাশে থাকবেন।’
তানভীন সুইটি বলেন,‘মঞ্চে আমার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে মুক্তি অন্যতম একটি নাটক। সোহিনী চরিত্রটিও আমার ভীষণ পছন্দের। এটা আমার জন্য পরম সৌভাগ্যের যে এখনো আমি আমাদের দেশের জীবন্ত কিংবদন্তী অভিনেত্রী, নন্দিত নাট্য ব্যক্তিত্ব শ্রদ্ধেয় ফেরদৌসী মজমুদারের সঙ্গে অভিনয় করতে পারছি। আমার কাছে মনে হয় এটা আমার জন্য ভীষণ গর্বের। দলের প্রতি, দলের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ যে নাটকটি দর্শকের কাছে তুলে ধরতে আমরা সবাই মিলে বারবার শ্রম দিয়ে থাকি।’
মুক্তি নাটকের মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন মনসুর আহমেদ, পোশাক পরিকল্পনায় ছিলেন ফেরদৌসী মজমুদার, আলোক পরিকল্পনায় নাসিরুল হক খোকন এবং সঙ্গীতে ছিলেন জগলুল আলম।